
গাজীপুরের মেয়র পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত জাহাঙ্গীর আলম ফের ওই পদে ফিরতে পারেন বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম। বরখাস্তের ওই আদেশ উঠিয়ে নিয়ে তার মেয়র পদে ফেরার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন বলে জানিয়েছেন তিনি। গাজীপুরের মৌচাকে জাতীয় যুব রেড ক্রিসেন্ট স্বেচ্ছাসেবক ক্যাম্পের অনুষ্ঠানে মন্ত্রী তাজুল ইসলাম বলেন, ‘তাকে (জাহাঙ্গীর) তো মেয়র পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়নি, সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। সাময়িকভাবে বরখাস্ত যেসব কারণে করা হয়েছে, সেগুলো (তুলে নেয়ার বিষয়টি) প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।’
এর আগে গত বছরের সেপ্টেম্বরে গোপনে ধারণ করা মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এরপর ৩ অক্টোবর তাকে এ বিষয়ে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় দল এবং তাকে দল থেকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত হয়। পরে তিনি গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদ থেকে অপসারিত হন। এর ছয় দিনের মাথায় ২৫ নভেম্বর স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তাজুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, গাজীপুর সিটি করপোরেশনে দলীয় প্রতীকে মেয়র পদে নির্বাচিত জাহাঙ্গীর এই পদ থেকেও বরখাস্ত হচ্ছেন। ওই দিনই তাকে গাজীপুরের মেয়র পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত করে প্রজ্ঞাপন জারি করে স্থানীয় সরকার বিভাগ।
কী কী কারণে জাহাঙ্গীর আলমকে বরখাস্ত করা হয়েছে, তা প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে। প্রজ্ঞাপনে ভুয়া দরপত্র, নির্দিষ্ট কোম্পানিকে দর দেয়ার অনুরোধসংক্রান্ত (আরএফকিউ) দরপত্রে অনিয়ম, বিভিন্ন পদে অযৌক্তিক লোকবল নিয়োগ, বিশ্ব ইজতেমা উপলক্ষে ভুয়া বিল-ভাউচারের মাধ্যমে ও একই কাজ বিভিন্ন প্রকল্পে দেখিয়ে অর্থ আত্মসাৎ, প্রতিবছর হাটবাজার ইজারার টাকা যথাযথভাবে নির্ধারিত খাতে জমা না রাখাসহ নানাবিধ অভিযোগ তুলে ধরা হয় জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে।
প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়, এসব অভিযোগ ক্ষমতার অপব্যবহার ও বিধিনিষেধের পরিপন্থী কার্যকলাপ দুর্নীতি ও ইচ্ছাকৃত অপশাসনের শামিল। এগুলো সিটি করপোরেশন আইনানুযায়ী অপসারণযোগ্য অপরাধ। এরই মধ্যে এসব অভিযোগ তদন্ত কার্যক্রম শুরু হয়েছে। সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে তাকে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হলো।
এর মধ্যে গত শনিবার আওয়ামী লীগের জাতীয় কমিটির বৈঠকে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থীসহ দলের শৃঙ্খলাবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত শতাধিক নেতাকে সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করা হয় বলে জানান দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। জাহাঙ্গীরের অনুসারী নেতা-কর্মীরা বলছেন, তিনিও সাধারণ ক্ষমার আওতায় রয়েছেন। ফলে দলের পদ ফিরে পাবেন তিনি। এবার স্থানীয় সরকারমন্ত্রীও ইঙ্গিত দিলেন জাহাঙ্গীরের মেয়র পদে ফেরার আভাস।